ছয় দফা: বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ

ছয় দফা: বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ
ছয় দফাকে কি বলা হয়?
উত্তরঃ বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ বা বাঙালির ম্যাগনা কার্টা।

ছয় দফা উত্থাপনের মূল উদ্দেশ্য কি ছিল?
উত্তরঃ পাকিস্তানের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে স্বায়ত্ত্বশাসন।

ছয় দফা কর্মসূচির মূল ভিত্তি কি ছিল?
উত্তরঃ ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব।

ছয় দফা কবে উত্থাপন করা হয়?
বা
ছয় দফা কবে পেশ করা হয়?
উত্তরঃ ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি।

ছয় দফা কোথায় উত্থাপন করা হয়?
বা
ছয় দফা কোথায় পেশ করা হয়?
উত্তরঃ লাহোরে বিরোধী দলের সম্মেলনে।

ছয়া দফা কে উত্থাপন করেন?
উত্তরঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

“ছয় দফা বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ” এটি কে বলেন?
উত্তরঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

ছয় দফা প্রণয়ন কারীদের পাকিস্তানের শত্রু বলেন কে?
উত্তরঃ আয়ুব খান।

আয়ুব খান কবে বলেন “ছয়দফা প্রণয়ন কারীরা পাকিস্তানের শত্রু”?
উত্তরঃ ১৯৬৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি।

বঙ্গবন্ধুর নামে "আমাদের বাঁচার দাবি- ছয় দফা কর্মসূচি " শিরোনামে পুস্তিকা বের হয় কবে?
উত্তরঃ ১৯৬৬ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি।

ছয় দফা কোথায় অনুমোদিত হয়?
উত্তরঃ আওয়ামীলীগের কাউন্সিল অধিবেশন।

আনুষ্ঠানিক ভাবে কবে ছয় দফা উত্থাপিত হয়?
উত্তরঃ ১৯৬৬ সালের ২৩ মার্চ।

ছয় দফা দিবস কবে?
উত্তরঃ ৭ জুন।

ছয় দফা দাবি আন্দোলনে শহিদ হন কে?
উত্তরঃ ১৯৬৬ এর ৭ জুন আওয়ামী লীগের ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ডাকা হরতালে পুলিশ গুলি চালালে মনু মিয়া সহ ১১ জন শহিদ হন।

ছয় দফা কে কিসের সাথে তুলনা করা হয়েছে?
উত্তরঃ ম্যাগনা কার্টার সাথে।

ম্যাগনা কার্টার কি?
উত্তরঃ ম্যাগনা কার্টা ইংল্যান্ডের ১২১৫ সালে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি।

ছয় দফা কর্মসূচিকে কেন বাঙালির ম্যাগনা কার্টার বলা হয়?
উত্তরঃ ইংল্যান্ডের ম্যাগনা কার্টা এর শর্ত গুলোর মধ্যে প্রধান হচ্ছে, রাজা প্রতিনিধি স্থানীয় লোকদের অনুমতি ছাড়া অঞ্চলের কোনো কিছুতে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। তেমনি ছয় দফার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে স্বায়ত্ত্বশাসন প্রতিষ্ঠা করা। যার ফলে অঙ্গরাজ্যের প্রধান প্রতিনিধির অনুমতি ছাড়া কেন্দ্র কোনো কিছুতে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। তাই ছয় দফা কে ম্যাগনা কার্টারের সাথে তুলনা করা হয়েছিল।

ছয় দফার দাবি সমূহ কি কি?
প্রথম দফাঃ লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে পাকিস্তানকে ফেডারেশন বা যুক্তরাষ্ট্রিয় পদ্ধতিতে গঠন করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ভোটে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে আইন পরিষদ গঠন হবে।

দ্বিতীয় দফাঃ প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বাদে  সব বিষয় ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত রাজ্যসমূহের হাতে ন্যস্ত থাকবে।

তৃতীয় দফাঃ পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পৃথক ও সহজে বিনিময় করা যায় এমন মুদ্রা চালু করতে হবে। পূর্ব পাকিস্তানের স্বার্থরক্ষা করে মুদ্রাব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। পূর্ব পাকিস্তান থেকে পুঁজি যাতে পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার হতে না পারে তার ব্যবস্থা সম্বলিত সুনির্দিষ্ট বিধি সংবিধানে প্রনয়ন করতে হবে।

চতুর্থ দফাঃ অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা কেন্দ্রের কাছে থাকবে এবং রাজ্য গুলোর নিজ নিজ বৈদেশিক মুদ্রা  আয়ের নিজস্ব হিসেব থাকবে ও বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করবে।

পঞ্চম দফাঃ কর ধার্যের ক্ষমতা থাকবে রাজ্যের কাছে। এক্ষেত্রে দেশিয় পর্ণ্য বিনিময়ে কর দার্য করা হবে না এবং রাজ্য গুলো যেন বিদেশি রাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে এই মর্মে সংবিধানে বিধান রাখতে হবে।

ষষ্ঠ দফাঃ রাজ্যগুলো আধাসামরিক বাহিনী গঠন করতে পারবে। পূর্ব পাকিস্তানে অস্ত্র কারখানা স্থাপন ও কেন্দ্রীয় নৌ বাহিনীর সদর দপ্তর স্থাপন করতে হবে।

ছয় দফা দিবস কত তারিখ?
উত্তর: ৭ জুন।

৬ দফা দিবস ৭ জুন কেন?
উত্তর ১৯৬৬ সালের ৭ জুন ছয় দফা দাবির পক্ষে সারাদেশে তীব্র গণ-আন্দোলন শুরু হয়। এই দিন আওয়ামী লীগের হরতালে ঢাকা, টঙ্গি, নারয়ণগঞ্জে পুলিশ ও ইপিআরের গুলিতে মনু মিয়া, শফিক, শামসুল হক সহ ১১ জন নিহত হয়। এর পর থেকে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৭ জুন ৬ দফা দিবস পালন করা হয়।