বাংলার বারোভূঁইয়াদের ইতিহাস
April 25, 2021

বাংলার ইতিহাসে বারোভূঁইয়াদের আবির্ভাব হয় কখন?
উত্তর: ষোল থেকে সতের শতকের মধ্যবর্তী সময়ে।
বারোভূঁইয়া কারা?
উত্তর: বাংলার পাঠান ও হিন্দু জমিদাররা।
বারোভূঁইয়াদের রাজধানী কোথায় ছিল?
উত্তর: সোনারগাঁও।
বারোভূঁইয়া বলতে কাদের বুঝায়?
উত্তর: স্বাধীনতা রক্ষার জন্য মুঘল সেনাপতিদের বিরুদ্ধে বাংলার যে সকল জমিদার একত্রিত হয়ে লড়াই করেছে ইতিহাসে তারাই বারোভূঁইয়া নামে পরিচিত। “বারোভূঁইয়া” এর "বারো" বলতে বারো জন জমিদারকে বুঝানো হয় না। অনির্দিষ্ট জমিদারদের বুঝাতেই “বারো” শব্দটির ব্যবহার করা হয়েছে।
বারোভূঁইয়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন-
উত্তর: ঈশা খান, মুসা খান, চাঁদ রায়, কেদার রায় বাহাদুর গাজি, সোনা গাজি, ওসমান খান, বীর হামির, লক্ষণ মাণিক্য, পরমানন্দ রায়, বিনোদ রায়, মধু রায়, মুকুন্দরায়, সত্রজিৎ, রাজা কন্দপনারায়ণ, রামচন্দ্র প্রমুখ।
বাংলায় বারোভূঁইয়াদের পরাজিত করে মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় কোন বাদশাহের সময়ে?
উত্তর: সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসন আমলে।
চাঁদ রায় ও কেদার রায়:
চাঁদ রায় ও কেদার রায়ের রাজধানী কোথায় ছিল?
উত্তর: শ্রীপুর (বিক্রমপুর, মানিকগঞ্জ)।
কেদার রায়ের ভাইয়ের নাম কি?
উত্তর: চাঁদ রায়।
চাঁদ রায়ের কন্যার নাম কি ছিল?
উত্তর: স্বর্ণমনি বা স্কর্ণময়ী।
চাঁদ রায়ের কন্যা স্বর্ণময়ী কে অপহরণ করেন?
উত্তর: ঈশা খান।
কেদার রায়ের সাথে ঈশা খানের বন্ধুত্ব নষ্ট হয় কখন?
উত্তর: চাঁদ রায়ের কন্যা স্বর্ণমনিকে অপহরণের পর।
ঈশা খান স্বর্ণময়ীর নাম রাখেন?
উত্তর: সোনাবিবি।
সম্রাট আকবরের কোন সুবেদার বিক্রমপুরে আক্রমন করেন?
উত্তর: রাজা মানসিংহ।
রাজা মানসিংহের পক্ষে কেদার রায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন কে?
উত্তর: সুসঙ্গের রাজা রঘুনাথ।
কেদার রায় কার সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়?
উত্তর: সুসঙ্গের রাজা রঘুনাথের সাথে।
ঈশা খান:
ঈশা খানের রাজধানী কোথায় ছিল?
উত্তর: সোনারগাওঁ।
কার নাম অনুসারে সোনারগাঁও নামকরণ করা হয়?
উত্তর: ঈশা খানের স্ত্রী সোনাবিবির নাম অনুসারে।
ঈশা খানের পিতার নাম কি?
উত্তর: সোলায়মান খান।
বাংলার বারভূইঁয়াদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন কে?
উওর: ঈশা খান।
ঈশা খানের বিরুদ্ধে সম্রাট আকবর বাংলার সুবেদার করে কাকে পাঠান?
উত্তর: রাজা মানসিংহককে।
সম্রাট আকবর রাজা মানসিংহকে প্রথমবার কত সালে বাংলায় পাঠান?
উত্তর: ১৫৯৪ সালে।
মুঘলদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করে ঈশা খান কি উপাধি ধারণ করেন?
উত্তর: মসনদ-ই-আলা।
ঈশা খান মৃত্যুবরণ করেন কত সালে?
উত্তর: ১৫৯৯ সালে।
মুসা খান:
মুসা খানের পিতার নাম কি?
উত্তর: ঈশা খান।
সম্রাট আকবর রাজা মানসিংহকে দ্বিতীয়বার কত সালে বাংলায় পাঠান?
উত্তর: ১৬০১ সালে।
মুসা খান মানসিংহের হাতে পরাজিত হন কত সালে?
উত্তর: ১৬০৩ সালে।
সম্রাট আকবর কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: ১৬০৫ সালে।
সম্রাট আকবরের মৃত্যুর পর দিল্লির সিংহাসনে কে বসেন?
উত্তর: সম্রাট জাহাঙ্গীর।
সম্রাট জাহাঙ্গীর মানসিংহকে আবার কত সালে বাংলার সুবেদার করে পাঠান?
উত্তর: ১৬০৬ সালে।
সম্রাট জাহাঙ্গীর ইসমাইল খানকে কত সালে বাংলার সুবেদার করে পাঠান?
উত্তর: ১৬০৮ সালে।
বাংলার রাজধানী রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন কে?
উত্তর: সুবেদার ইসমাইল খান।
বারোভূঁইয়াদের মোকাবেলা করার জন্য শক্তিশালী নৌবহর গড় তুলেন কে?
উত্তর: সুবেদার ইসমাইল খান।
মুসা খান ও সুবেদার ইসমাইল খানের মধ্যে সংঘর্ষ হয় কত সালে?
উত্তর: ১৬০৯ সালে।
মুঘল সাম্রাজ্যের বাংলার রাজধানী ঢাকা করা হয় কত সালে?
উত্তর: ১৬১০ সালে।
ইসমাইল খান ঢাকার কি নামকরণ করেন?
উত্তর: জাহাঙ্গীরনগর।
ইসমাইল খানের সাথে জমিদারদের যুদ্ধ হয় কত সালে?
উত্তর: ১৬১১ সালে।
মুঘল সৈন্যরা সোনারগাঁও অধিকার করার পর মুসা খান কোথায় আশ্রয় নেন?
উত্তর: মেঘনা নদীতে অবস্থিত ইব্রাহিমপুর দ্বীপে।
বারোভূঁইয়াদের শাসনের অবসান ঘটে কিভাবে?
উত্তর: ১৬১১ সালে বারোভূঁইয়া জমিদার মুসা খানের নেতৃত্বে মুঘলদের বাধা দেওয়ার জন্য নৌবহর ও সৈন্য প্রেরণ করেন। যার ফলে মুঘল সুবেদার ইসমাইল খানের সাথে যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে বারোভূঁইয়াদের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলায় বারোঁভূইয়া শাসনের অবসান ঘটে। এ যুদ্ধের পর মুসা খানসহ সকল জমিদাররা মুঘল সুবেদার ইসমাইল খানের নিকট আত্মসমার্পন করেন।