হিসাববিজ্ঞান পরিচিতি

হিসাববিজ্ঞান পরিচিতি
হিসাববিজ্ঞান কাকে বলে?
উওর: আর্থিক লেনদেন সমূহের সার্বিক ফলাফল নির্ণয় ও বিবরণের সাহায্যে বিশ্লেষণ করা কে হিসাববিজ্ঞান বলে।

হিসাববিজ্ঞানের জনক কে?
উওর: লুকা প্যাসিওলি।

তথ্য সরবরাহের ভাষা বলা হয় কাকে?
উত্তর: হিসাববিজ্ঞান কে।

হিসাববিজ্ঞান প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ কি?
উওর: লেনদেন শনাক্তকরণ।

আভিধানিক অর্থে  হিসাব বলতে কী বোঝায়?
উওর: গণনা করা।

ব্যবসায়ের ভাষা বলা হয় কাকে?
উওর: হিসাববিজ্ঞানকে।

হিসাববিজ্ঞানকে ব্যবসায়ের ভাষা বলা হয় কেন?
উওর: আর্থিক তথ্য সরবরাহ করে বিধায় হিসাববিজ্ঞানকে ব্যবসায়ের ভাষা বলা হয়।

হিসাববিজ্ঞানের প্রথম গ্রন্থের নাম কি?
উওর: সুম্মা ডি এরিথমেটিকা জিওমেট্রিয়া প্রোপোরশনিয়েট প্রোপোরশনালিটা।

হিসাববিজ্ঞানের প্রধান শাখা কয়টি?
উওর: তিনটি।

হিসাববিজ্ঞানের প্রধান তিনটি শাখা কী কী?
উত্তর:
১. আর্থিক হিসাব বিজ্ঞান
২. উৎপাদন হিসাব বিজ্ঞান
৩. ব্যবস্থাপকীয় হিসাব বিজ্ঞান।

আর্থিক হিসাববিজ্ঞান কি?
উত্তর: হিসাববিজ্ঞানের একটি শাখা। অর্থাৎ হিসাববিজ্ঞানের যে শাখায় অর্থনৈতিক এবং আর্থিক তথ্যসমূহ বিনিয়োগকারী, পাওনাদার ও অন্যান্য বাহ্যিক পক্ষসমূহকে সরবরাহ করা হয় তাকে আর্থিক হিসাব বিজ্ঞান বলে।

হিসাববিজ্ঞানের প্রধান উদ্দেশ্য কি?
উওর: আগ্রহী ব্যবহারকারীদেরকে প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া।

হিসাববিজ্ঞানের প্রাথমিক উদ্দেশ্য কি?
উওর: প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত লেনদেন সনাক্তকরণ ও লিপিবদ্ধ করণ।

দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি বলতে কি বুঝায়?
উওর: প্রত্যেকটি লেনদেনকে দুটি পক্ষে লিপিবদ্ধকরণ।

দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির প্রণেতা বা জনক কে?
উওর: লুকা প্যাসিওলি।

দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির উদ্ভব হয় কত সালে?
উওর: ১৪৯৪ সালে।

হিসাববিজ্ঞানের তথ্য ব্যবস্থায় কয়টি পক্ষ জড়িত থাকে?
উত্তর: দুটি পক্ষ জড়িত থাকে। যথা: তথ্য প্রস্তুতকারী এবং তথ্যের ব্যবহারকারী।

হিসাববিজ্ঞান তথ্যের ব্যবহারকারী কয়জন?
উত্তর: ২ জন। যথা: অভ্যন্তরীণ ব্যবহারকারী ও বাহ্যিক ব্যবহারকারী।

হিসাববিজ্ঞানের নৈতিকতা বলতে কি বুঝায়?
উত্তর: হিসাববিজ্ঞানে নৈতিকতা হলো একটি মানদন্ড। যা হিসাববিজ্ঞানের কার্যাবলি সততা বা অসততা, ঠিক বা ভুল, স্বচ্ছতা বা অস্বচ্ছতা, বৈধ বা অবৈধ বিচার করে থাকে।

লেনদেন:

হিসাববিজ্ঞানের কাঁচামাল হিসেবে বিবেচনা করা হয়?
উত্তর: লেনদেন।

লেনদেনের আভিধানিক অর্থ কি?
উত্তর: আদান-প্রদান।

লেনদেন কাকে বলে?
উত্তর: হিসাববিজ্ঞানে কোন ব্যবসায়ে অর্থ ও অর্থের মাপকাঠিতে পরিমাপযোগ্য সকল ধরনের অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে লেনদেন বলে।

লেনদেনের মৌলিক বৈশিষ্ট্য কি কি?
উত্তর: লেনদেনের মৌলিক বৈশিষ্ট্য গুলো হলো-
  • লেনদেন অবশ্যই আর্থিক মূল্যে পরিমাপযোগ্য হতে হবে।
  • দ্বৈতসত্ত্বার অধিকারী হবে (ডেবিট ও ক্রেডিট)
  • লেনদেনের ফলে ব্যবসায়ের আর্থিক অবস্থায় (A=L+OE) অবশ্যই পরিবর্তন হবে।
  • স্বয়ংসম্পূর্ণ ও স্বতন্ত্র হবে।
  • পণ্য দ্রব্য বা সেবার বিনিময় আবশ্যকীয়।
হিসাব সমীকরণ:

হিসাব সমীকরণ কাকে বলে?
উত্তর: যে মাধ্যমে ব্যবসায়ের মোট সম্পত্তি এবং দায়ের সর্ম্পক প্রকাশ করা হয় তাকে হিসাব সমীকরণ বলা হয়।

হিসাব সমীকরণের সূত্র কি?
উত্তর: A = L + OE. এখানে A হচ্ছে Assets (সম্পত্তি),  L হচ্ছে Liabilities (দায়)
এবং OE হচ্ছে Owner’s Equity (মালিকানা স্বত্ত্ব)।

মালিকানা স্বত্ব বৃদ্ধি পায় কখন?
উত্তর: প্রতিষ্ঠানের লাভ হলে ও অতিরিক্ত মূলধন আনয়নের মাধ্যমে।

সম্পদ কাকে বলে?
উত্তর: সম্পদ হলো প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন কোন বস্তু যা প্রতিষ্ঠানকে ভবিষ্যত সুবিধা প্রদান করে।

দায় কাকে বলে?
উত্তর: কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন সম্পদের উপর ঐ প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় পক্ষের দাবির সমষ্টিকে দায় বলে। যেমন: বিবিধ পাওনাদার, প্রদেয় বিল, বকেয়া ব্যয় ইত্যাদি।

দায় বৃদ্ধি পেলে কি করতে হবে?
উত্তর: দায় বৃদ্ধি পেলে ক্রেডিট করতে হবে।

দায় হ্রাস পেলে কি করতে হবে?
উত্তর: দায় হ্রাস পেলে ডিবিট করতে হবে।

মালিকানা স্বত্ত্ব কাকে বলে?
উত্তর: সম্পত্তির বিপরীতে মালিকের দাবীকে মালিকানা স্বত্ত্ব বা মূলধন বলে।

স্বত্বাধিকার বৃদ্ধি পেলে কি করতে হবে?
উত্তর: স্বত্বাধিকার বৃদ্ধি পেলে ক্রেডিট করতে হবে।

স্বত্বাধিকার হ্রাস পেলে কি করতে হবে?
উত্তর: স্বত্বাধিকার হ্রাস পেলে ডিবিট করতে হবে।

হিসাব লেনদেনের প্রভাবকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর: দুই ভাগে। যথা: (১) পরিমাণগত বা নীট পরিবর্তন ও (২) গুণগত বা কাঠামোগত পরিবর্তন।

হিসাব:

হিসাব শব্দের অর্থ কি?
উত্তর: আর্থিক তথ্যাবলির গণনা কার্য।

হিসাব কাকে বলে?
উত্তর: লেনদেনের সংক্ষিপ্ত শ্রেণীবদ্ধ বিবরণকে হিসাব বলে।

হিসাবকে কয় ভাগে ভাগ করা হয়?
উত্তর: সনাতন পদ্ধতিতে হিসাবকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা (১) ব্যক্তিবাচক হিসাব, (২) সম্পত্তিবাচক বা বাস্তব হিসাব ও (৩) নামিক বা আয়–ব্যয় বাচক হিসাব

ব্যাক্তিবাচক হিসাব কাকে বলে?
উত্তর: কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত হিসাবই ব্যক্তিবাচক হিসাব।

ব্যাক্তিবাচক হিসাব কত ধরণের?
উত্তর: তিন ধরণের। যথা: (১) স্বাভাবিক ব্যক্তিবাচক হিসাব, (২) কৃত্তিম ব্যক্তিবাচক হিসাব এবং (৩) প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যক্তিবাচক হিসাব।

সম্পত্তিবাচক বা বাস্তব হিসাব কাকে বলে?
উত্তর: কোনো ব্যবসায় সম্পত্তির নামে যদি হিসাব সংরক্ষণ করা হয় তবে তাকে সম্পত্তিবাচক হিসাব বলে।

নামিক বা আয়-ব্যয় বাচক হিসাব কাকে বলে?
উত্তর: ব্যবসার সকল আয় ব্যয় সম্পর্কিত হিসাবকে নামিক বা আয়-ব্যয় বাচক হিসাব বলে।

আয় হিসাব কি?
উত্তর: আয় সাধারণত ক্রেডিট ব্যালেন্স নির্দেশ করে। আয় মালিকানা স্বত্বকে বৃদ্ধি করে।
আয় বৃদ্ধি পেলে ককরতে হবে ক্রেডিট ও আয় হ্রাস পেলে ডেবিট।

আয়ের উদাহরণ দাও।
উত্তর: বিনিয়োগের সুদ, বিক্রয় হিসাব, প্রাপ্ত ভাড়া হিসাব, সুদ আয় হিসাব, প্রাপ্ত কমিশন হিসাব, প্রাপ্ত বাট্টা হিসাব ইত্যাদি।

ব্যয় হিসাব কি?
উত্তর: ব্যয় সাধারণত ডেবিট ব্যালেন্স নির্দেশ করে। ব্যয় মালিকানা স্বত্বকে হ্রাস করে। ব্যয় বৃদ্ধি পেলে ডেবিট ও ব্যয় হ্রাস পেলে ক্রেডিট করতে হবে।

উত্তোলন কি?
উত্তর: মালিক ব্যক্তিগত কাজের জন্য নগদ ও পণ্য তুলে নেওয়াই উত্তোলন। উত্তোলন মালিকানা স্বত্বকে হ্রাস করে।

অতিরিক্ত বিনিয়োগ কি?
উত্তর: ব্যবসায় পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত টাকা, কোন সম্পদ ইত্যাদি মুলধন হিসাবে আনলে তা মালিকানা স্বত্বকে বৃদ্ধি করে। এই প্রক্রিয়াকেই অতিরিক্ত বিনিয়োগ বলে।

নিরীক্ষা কি?
উত্তর: কোনো আর্থিক বিবরণী উপস্থাপন নিখুত কি না তা সনদপ্রাপ্ত হিসাববিজ্ঞানী কর্তৃক যাচাই করাকে নিরীক্ষা বলা হয়।

ভুল কাকে বলে?
উত্তর: অনিচ্ছাকৃত কোন ত্রুটি করলে হিসাবে যে গরমিল হয় তাকে ভুল বলে।

প্রতারণা কাকে বলে?
উত্তর: ইচ্ছাকৃতভাবে হিসাব সংক্রান্ত কাজে কোন তথ্য গোপন করলে বা তহবিল আত্মসাৎ করলে তাকে প্রতারনা বলে।

স্বর্ণসূত্র:

স্বর্ণসূত্র কাকে বলে?
উত্তর: লেনদেনকে হিসাবের খাতায় লিপিবদ্ধ করার জন্য দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি অনুসারে নিয়ম বা সূত্র অনুযায়ী ডেবিট এবং ক্রেডিট করার প্রাচীনতম নিয়মকে স্বর্ণসূত্র (Golden Rule) বলে।

স্বর্ণসূত্র অনুসারে ডেবিট এবং ক্রেডিট করার জন্য হিসাবকে কয় ভাগে ভাগ করা হয়?
উত্তর: তিন ভাগে।

হিসাববিজ্ঞানের স্বর্ণসূত্রের জনক কে?
উত্তর: লুকা ডি প্যাসিওলি।

হিসাববিজ্ঞানের নীতিমালা:

হিসাববিজ্ঞানের নীতিমালা বলতে কি বুঝায়?
উত্তর: হিসাববিজ্ঞান নীতিমালা বলতে এমন কতগুলো মৌলিক বা স্বতঃসিদ্ধ সত্যকে বুঝায় যেগুলো হিসাবরক্ষণের ক্ষেত্রে সকলের নিকট গ্রহনযোগ্য ও সকল ক্ষেত্রে সত্য বলে প্রমাণিত হয়।

IASC এর পূর্ণরূপ কি?
উত্তর: International Accounting Standard Board.

GAAP এর পূর্ণরূপ কি?
উত্তর: Generally Accepted Accounting Principles.

SEC এর পূর্ণরূপ কি?
উত্তর: Securities and Exchange Commission.